বুধবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১০

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা বুড়োদেরও!



বাংলাদেশ দলে টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ের প্রতীক বললে প্রথমেই আসবে তামিম ইকবালের নাম। আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল ঘোষণার পর যাঁর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন ছিল, তাঁর নাম ইমরুল কায়েস। অথচ এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে এই দুজনের মুখোমুখি লড়াইয়ে উল্টো ঘটনাই ঘটল। ৪৮ বলে ৭১ রান করে নায়ক ইমরুল কায়েস আর তামিম ইকবাল প্রথম বলেই বোল্ড!
এই বৈপরীত্য ছিল দিনের অন্য দুই ম্যাচেও। যার একটিতে ঢাকা ডায়নামাইটস ৪০ রানে হারিয়েছে সুলতানস অব সিলেটকে। অন্যটিতে রাজশাহী রেঞ্জার্স ৭ উইকেটে হেরেছে বরিশাল ব্লেজার্সের কাছে। আর তামিম-ইমরুলের ম্যাচে ইমরুলের দল কিংস অব খুলনা ৭৮ রানে জিতেছে তামিমের সাইক্লোনস অব চিটাগংয়ের বিপক্ষে। অঙ্কের হিসেবে এখনো সম্ভাবনা আছে, তবে টানা তিন ম্যাচে হেরে চট্টগ্রামের সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কিংস অব খুলনার ৭ উইকেটে ১৮০ রানের ইনিংসের পুরোটাই প্রায় ‘ইমরুল শো’। ওপেনিংয়ে নেমে আউট হয়েছেন ১৭তম ওভারে। ৩৬ বলের ফিফটিতেই মেরেছেন ৫টি চার ও দুটি ছক্কা, পরে চার-ছক্কা মেরেছেন আরও একটি করে। বাকিদের মধ্যে সঙ্গী শ্রীলঙ্কান ওপেনার ১২ বলে ২৭ রান করেছেন, কিন্তু কালও ব্যর্থ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আগের ম্যাচে করেছিলেন ১৮, কাল ১৬ বলে ১৬ রান করে শোয়েব আখতারকে ‘দিল স্কুপ’ মারতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ। এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে তিন ম্যাচে ‘পিন্ডি এক্সপ্রেসের’ অর্জন এই একটা উইকেটই। তাঁকে বিদায় করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেও তাই বেশি ভাবতে হয়নি চট্টগ্রামকে।
এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে খুলনার ১৮০ রানই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ, চট্টগ্রাম যেটার সামনে একরকম নুয়েই পড়ল। কৃতিত্বটা নুয়ান জয়সারই বেশি। ইনিংসের প্রথম বলেই তামিমের মিডল স্টাম্প উপড়ে ফেলার পর তৃতীয় ওভারে পর পর দুই বলে উত্তম সরকার আর খুররমকে ফিরিয়ে সাইক্লোনসকে নির্বিষ করে দিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কান এই পেসারই। বাকিটা ছিল কেবলই আনুষ্ঠানিকতা।
মিরপুরে সকালের ম্যাচেও টি-টোয়েন্টি ব্রাত্যদের মুখেই হাসি ফুটেছে। রাজশাহী রেঞ্জার্সের ১১৫ রানের জবাবে বরিশাল ব্লেজার্সের ২৩ বল বাকি থাকতে পাওয়া জয়ে সর্বোচ্চ (২৫ বলে ৩৬) রান রকিবুল হাসানের। অথচ রাজশাহীর ‘ছক্কা নাঈম’ করলেন ৭ বলে মাত্র ৫ রান!
মেহরাব হোসেন জুনিয়রের ব্যাটিংটাও ঠিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সঙ্গে যায় না। অথচ বিকেএসপির ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে সর্বোচ্চ (৪৪ বলে অপরাজিত ৫৮) ইনিংসটি তাঁরই! শ্রীলঙ্কান জীবন মেন্ডিসের ৩৯ বলে ৪০ রান কিছুটা সমর্থন দিলেও মোহাম্মদ আশরাফুল, জহুরুল ইসলামের মতো মারকুটেদের ব্যর্থতায় ঢাকা ৬ উইকেটে করল মাত্র ১৩৩ রান। চার নম্বরে নেমে আশরাফুল প্রথম বলেই নাজমুলের বলে বোল্ড, জহুরুল তো কোনো বল খেলার আগেই রান আউট! সুলতানস অব সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার কৃতিত্বটাকেও খাটো করে দেখার উপায় নেই। আগের দিন ২ উইকেট নেওয়ার পর কাল ২৪ রানে ৩ উইকেট—টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য আত্মবিশ্বাস অর্জনের কাজটা ভালোই হচ্ছে তাঁর। ঢাকা তার পরও টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে বোলারদের কৃতিত্বে এবং সেই বোলারদের মধ্যে ব্যাট হাতে ব্যর্থ আশরাফুলও আছেন। ১৩ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। তবে সিলেটকে ৯৩ রানে অলআউট করে দেওয়ায় সবচেয়ে বেশি অবদান ম্যান অব দ্য ম্যাচ মোহাম্মদ রফিকের—৩.৩ ওভার বল করে মাত্র ৭ রানে ৪ উইকেট এই বাঁহাতি স্পিনারের।
এখানেও বৈপরীত্য! রফিকই তো দেখালেন, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা বুড়োদেরও!
Source: DPA

1 টি মন্তব্য: