শনিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১০

Mashrafee joined NCLt20 surprisingly


টোয়েন্টি-টোয়েন্টির লটারিপর্বে সুলতানস অব সিলেট প্রথমেই ডেকে নিয়েছিলেন মাশরাফিকে। ব্যাপারটা বোধগম্য হয়নি অনেকের। তারা এটিকে ভেবেছিলেন জুয়া; যে জুয়ায় পরাজয় কেবল সময়ের ব্যাপার। কেকেআর নিশ্চয়ই মাশরাফিকে ছাড়বে না! আর তাঁর যেহেতু বিসিবি থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি নেওয়া, তাই ফিরে আসার বাধ্যবাধকতাও নেই। কিন্তু সুলতানস অব সিলেটের কর্মকর্তারা সেই অসাধ্য সাধন করলেন। এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা কেকেআরের কোচ ডেভ হোয়াটমোরের। মাশরাফি বলেছেন তেমনটাই 'ডেভই কর্মকর্তাদের বললেন, ওখানে নেট প্র্যাকটিস করার চেয়ে এখানে আমি ম্যাচের মধ্যে থাকলে ভালো হবে। আর বলেছেন, প্রয়োজন হলেই আমি যেন চলে যাই।'
সময়টা খারাপ কাটছিল না। আবার খুব ভালোও তো না। পুকুরের মাছের কী আর চৌবাচ্চায় সাঁতার কেটে মন ভরে? ম্যাচ খেলার বদলে নেট প্র্যাকটিস তাই একঘেয়ে উঠছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার কাছে। হোক না সেটি আইপিএলের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে। হোক না সেটি কোটি টাকার বিনিময়ে!
সুলতানস অব সিলেটের ডাকটি তাই দমবন্ধ মাশরাফির কাছে এসেছে অক্সিজেন হয়ে। আর কাল বিকেলে জাতীয় লিগের দলটির সংবাদ সম্মেলনে তাঁর উপস্থিতি সবার কাছে এসেছে বড় চমক হয়ে। এমনই যে, মিরপুর স্টেডিয়ামে জাতীয় দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান তাঁকে দেখে দিলেন রীতিমতো চিৎকার, 'আরে মাশরাফি ভাই? আপনি? কখন এলেন?'

তবে কেকেআরের বোধকরি মাশরাফিকে প্রয়োজন হবে না। তার চেয়ে ঢের বেশি প্রয়োজন বাংলাদেশের। জাতীয় লিগের টোয়েন্টি-টোয়েন্টিতে খেলে যদি ক্যারিবীয় বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন, সেটিই হবে বড় প্রাপ্তি, 'আমার লক্ষ্যও তেমনটি। ম্যাচ খেলতে খেলতেই আমার ফিটনেস আরো ভালো হবে। এখনই আমি ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ফিট। টোয়েন্টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আশা করি শতভাগ ফিট মাশরাফিকেই আপনারা দেখবেন।'
সেই ভালো। নইলে যে বিতর্কের ঝাঁপিটা আবারও খুলে যাওয়ার আশঙ্কা। ইংল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজে প্রথম ওয়ানডের পর মাশরাফির হোটেল ছাড়া নিয়ে তো গালগপ্পো কম হয়নি। মাশরাফি-সাকিব এখন হাসিমুখে কথা বললেই সে গপ্পো থামবে না। পূর্ণ ফিট মাশরাফি জাতীয় দলে নিজের জায়গা ফিরে পাওয়াই এর সমাধান। সেই পথে বড় এক ধাপ জাতীয় লিগের টোয়েন্টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টটি বড় ভূমিকা রাখবে বলে মাশরাফির বিশ্বাস।
আরো বড় বিশ্বাস তাঁর দলের ওপর। সুলতানস অব সিলেটের নেতৃত্বভার থাকবে তাঁর ওপর। এ দলটি নিয়েও বড় কিছুর স্বপ্ন দেখছেন মাশরাফি, 'দলে খুব যে বড় বড় নাম আছে, তা না। অলক-রুবেলের মতো কিছু অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের পাশাপাশি তারুণ্যেরই প্রাধান্য। তরুণ প্লেয়াররা সবসময়ই দলের শক্তি। আশা করি এ দলটি নিয়ে আমরা চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইট দিতে পারব।'
কেকেআর থেকে চলে এলেও চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রমিকের পুরো অর্থ পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মাশরাফি। জাতীয় লিগে আইকন ক্রিকেটারের তালিকায় না থাকলেও সর্বোচ্চ চার লাখ টাকাই পাবেন তিনি। ছিলেন যে এ+ গ্রেডে। ক্রিকেটারদের এই পারিশ্রমিক দেবে ফ্রেঞ্চাইজিগুলো। পাশাপাশি দল কেনার ভিত্তিমূল্য তো আছেই। সুলতানস অব সিলেটের মালিকপক্ষ অবশ্য কিছু অর্থ তুলেও আনছেন। দলের স্পন্সর যে হয়েছে ব্রাক ব্যাংক।
এনেছে তারা বিদেশি ক্রিকেটারও। পাকিস্তানের সেই ফয়সাল ইকবাল অবশ্য নিজের পরিচয়ের চেয়েও জাভেদ মিয়াঁদাদের ভাগিনা হিসেবে বেশি পরিচিত। সংবাদ সম্মেলনে তাঁকে প্রশ্ন করার মতো তেমন কোনো প্রশ্নই খুঁজে পাননি সাংবাদিকরা।
পাবেন কী করে? মাশরাফি-চমকের ঘোর যে তখনো কাটেনি!
Source: D.K.K

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন