সোমবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১০
এমন নিরামিশ সেমিফাইনাল বোধ হয় কেউ প্রত্যাশা করেনি
টি-টোয়েন্টির উত্তাপের দেখা যায়নি প্রথম সেমিফাইনালেও, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টির অভিজ্ঞদের নিয়ে গড়া সিলেট সুলতানের ব্যাটিং ঝড়ও হয়তো টিম ম্যানেজমেনেটর প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু তাদের সেই প্রত্যাশা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম পর্যমত্ম সীমাবদ্ধ ছিল। সেমিফাইনালের আগ পর্যমত্ম সিলেট সুলতানের ব্যাটসম্যানরা ব্যাটিংয়ের যে ঝড় দেখিয়েছেন তাতে এমন নিরামিশ সেমিফাইনাল বোধ হয় কেউ প্রত্যাশা করেনি। তবে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে টি-টোয়েন্টির মেজাজ প্রথম ম্যাচের তুলনায় কিছুটা ফুটে উঠেছে। তারপরও আশরাফুল নাঈমদের মত মারকুটে ব্যাটসম্যান থাকা সত্ত্বেও এমন মরা ম্যাচ দেখতে হবে দর্শকদের যা তারাও ভাবেনি।
সিলেটের শক্তিকে খর্ব করে কাল খুলনা এনসিএলের টি-টোয়েন্টির ফাইনাল জায়গা করে নিল, আর দ্বিতীয় সেমিফাইনালে জয়ী হয়ে রাজশাহী ফাইনালে জায়গা করে নেয়। খুলনার বিষয়টি বলতে গেলে একটু আলাদা, সেমিফাইনালের আগে তাদের মরা পারফর্মেন্সে টিকে থাকাটাই যেখানে দায় হয়েছিল, সেখানে কাল সিলেটকে ১৩১ রানে বেঁধে ফেলে ৬ উইকেটের জয় নিয়ে চলে গেল ফাইনালে। সিলেটের মেয়র বদরম্নদ্দিন কামরানের উপস্থিতিতেও মাশরাফি পারেননি তার দলকে প্রথম সেমিফাইনালের ফাইনালে উঠাতে।
বরাবরের মত কালও সাকিব ব্যাট হাতে ব্যর্থ এই টুর্নামেন্টে তিনি বোধ হয় পণ করেছেন রান করবেন না। না হলে ১৩১ রানের মামুলি স্কোর সত্ত্বেও জয় থেকে মাত্র ৮ রান দূরে কেন তিনি ওমন করে শট খেলতে গেলেন। দল জিতেছে ৬ উইকেটে; কিন্তু সেটির ব্যবধান আরেকটু বড় হতে পারতো। তার মতই ভুল করেছেন অলোক কাপালী। খুলনার অধিনায়ক সাকিবের বলের ফাঁদে পা ফেলে এগিয়ে মারতে গিয়ে স্ট্যাম্প হয়ে পুরো দলকে ডুবিয়েছেন তিনি। শ্রীলংকান নুয়ান জয়সা দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দিয়ে সিলেটের ব্যাটিং লাইন আপ ভেঙ্গে দিয়েছেন। বড় একটি পার্টনারশীপের প্রয়োজন হলেও ধীমান লেগ সাইডে বল খেলতে গিয়ে এলবি হন রাজ্জাকের প্রথম স্পেলের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে। তবে ৫২ রানের একটি পার্টনারশীপ হয়েছে ফরহাদ রেজা এবং ইন্ডিকার কারণে। রাজ্জাকের তৃতীয় ওভারে দুই চার ও ১ ছক্কায় ১৭ রান নিয়ে সিলেটকে সেঞ্চুরি রানে পৌঁছে দেন ১৫.৫ ওভারে। ফরহাদ আলাউদ্দিন বাবুর বলটি উঠিয়ে মারতে গিয়ে পয়েন্টে সাকিবের হাতে ধরা পড়ার আগে দলকে মূল্যবান ৪৩ রান দিয়ে যান। শেষদিকে ছক্কা মিলন ছক্কা না পাওয়ায় এবং অধিনায়ক মাশরাফি রানের পিছনে ছুটতে গিয়ে ১৫ বলে ১৫ রান করায় দলের স্কোর ১৪০-এ যেতে পারেনি। ১৩১ রানে আটকে থেকে খুলনা কিংসকে টার্গেট দেয় ১৩২ রানে।
তবে খুলনাও যে বেশ সহজে জয় পেয়েছে তা নয়। খেলা শেষ হওয়ার দুই বল বাকি থাকতে খুলনা জয় পায়। অথচ টি-টোয়েন্টির প্রতি ওভারেই তারা রানের জন্য যুদ্ধ করেছে। ৫ ওভারে ৪০, ১০ ওভারে ৫৮ রান এভাবে স্কোরের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন শ্রীলংকান মাহেলা লকমল এবং ইমরম্নল কায়েস। তবে এই দুইজনের দ্বিতীয় উইকেট জুটিটি খুলনাকে জয় পাইয়ে দেয়। বিশেষ করে ওপেনিংয়ে নেমে যে বুদ্ধির ব্যাটিংয়ের পরিচয় দিয়েছেন, ফরহাদের থ্রোতে রান আউট হবার আগে ৩৬ বলে ৩৮ রান বলে দিচ্ছে মাহেলার ইনিংসটি কতটা গুরম্নত্বপূর্ণ ছিল। ম্যাচসেরাও তিনি হন। বলতে গেলে ভঙ্গুর খুলনাকে ফাইনালে উঠানোর সব কৃতিতব মাহেলার, অধিনায়ক সাকিবের নয়।
মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে প্রথমে ব্যাটিং-এ নেমে রাজশাহী ২০ ওভারে রান করে ৬ উইকেটে ১৪২। আলদ্বীন সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন। আর নাঈম করেন ৩১। ঢাকার তাপস বৈষ্য ১৭ রানে ২ উইকেট নেন। জবাবে জয়ের জন্য ১৪৩ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে লিগ পর্বে অপরাজিত আশরাফুলের ঢাকা ১৩০ রানে অলআউট হয়ে যায় খেলার ১ বল বাকি থাকতে। মোহাম্মদুলস্না সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন। সাইফুল, নাঈম ২টি করে উইকেট নেন। ব্যাটিং ও বলিং নৈপুণ্য প্রদর্শন করে ম্যাচ সেরা হন নাঈম ইসলাম।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন